নিউস ত্রিপুরা প্রতিনিধিঃ ধোলাইয়ের গঙ্গানগর বাজার সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী ২২ বছর বয়সি শ্রীমতি ঊষারাণী রিয়াং বর্তমানে এক ছয় বছরের শিশুকে নিয়ে জীবনযুদ্ধে নেমেছেন। সাত বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে সাব্রুমের পূর্ব সাব্রুম এলাকার বাসিন্দা খগেন্দ্র ত্রিপুরার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ঊষারাণী। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ভিত্তি যেখানে বিশ্বাস, সেখানে সেই বিশ্বাসকে পায়ের নিচে পিষে নির্দয়ভাবে ঊষারাণীকে আজ নিঃস্ব করে দিয়েছেন তার স্বামী খগেন্দ্র।
বর্তমানে খগেন্দ্র ত্রিপুরা আবারও বিবাহ করেন দুই সন্তানের জননী চম্পা লক্ষ্মী ত্রিপুরাকে, ঊষারাণীকে সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করে। শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের করুণ স্মৃতি বুকে নিয়ে আজ ঊষারাণী ছেলেকে নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন একমুঠো ভাতের জন্য।
অভিযোগ উঠেছে, খগেন্দ্র ত্রিপুরা তার বন্ধু চিরন ত্রিপুরার সহায়তায় নিয়মিত হুমকি দিচ্ছেন ঊষারাণীকে। তিনি যদি আইনের দ্বারস্থ হন, তবে তার সন্তানসহ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ঊষারাণী অভিযোগ করেন, একাধিকবার তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও খগেন্দ্র তাকে বিকৃত যৌন আচরণের শিকার করেছেন, যা বিবাহিত জীবনের মানসিক নিরাপত্তাকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেয়।
পূর্ব সাব্রুম এলাকার জনজাতি সমাজের ৪৬ জন সচেতন পুরুষ ও মহিলা একত্রিত হয়ে এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা সাব্রুম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (GD) এন্ট্রি করেছেন এবং খগেন্দ্র ত্রিপুরা ও চিরন ত্রিপুরার বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপের দাবি জানান। থানার পুলিশ আধিকারিকরা আশ্বস্ত করেছেন, তাঁরা সুষ্ঠু তদন্ত করবেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনাটি আবারও সামনে এনে দিল নারীর প্রতি সহিংসতার নির্মম বাস্তবতা। ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি, বিবাহের বন্ধন, এক সন্তান নিয়ে জীবনের স্বপ্ন—সবই যেন প্রতারণা ও পৈশাচিক মানসিকতার কাছে পরাজিত। সমাজ আজ প্রশ্ন করছে—নারী কি কেবল ভোগের উপকরণ? আইন ও প্রশাসন কি পারবে এই নিষ্পেষিত নারীকে ন্যায়বিচার দিতে?
উষারাণীর জীবনযুদ্ধ এখন শুধু তার নিজের লড়াই নয়, এটি গোটা সমাজের জন্য একটি চেতনার ঘন্টাধ্বনি।