ভুবনবনের সারদা পল্লী এলাকায় নিজ বাড়িতে খুন হওয়া মহিলার হত্যাকান্ডের কিনারা করল পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৃদ্ধার মেয়ে এবং মেয়ের জামাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত অভিযুক্তরা ঘটনা স্বীকার করেছে। এদিন সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ডিপি রায় এই সংবাদ জানিয়েছেন।
গত রবিবার বিকেলে পশ্চিম থানাধীন ভুবনবনের সারদাপল্লী এলাকায় নিজ বাড়িতে গুরুতর আহত হন সুলেখা দে নামের ৭৪ বছরের এক বৃদ্ধা ।তার গলার স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে যায় হত্যাকারী ।এমনটাই অভিযোগ ছিল বৃদ্ধার মেয়ে বুলটি দেবের ।সোমবার জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সুলেখা দের। গোটা বিষয়ে একটি হত্যার মামলা হাতে নিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পশ্চিম থানার ওসি রানা চ্যাটার্জি এবং রামনগর ফাঁড়ির ওসি শুভেন্দু দাস। তারা দফায় দফায় মৃতা সুলেখা দের মেয়ে বুলটি দেব এবং তার স্বামী বিষ্ণু দেব কে জিজ্ঞাসা বাত করতে থাকেন। বারবার মৃতার মেয়ে বুলটি দেব ঘটনাটি দুষ্কৃতীদের কাজ বলে এড়িয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তাদের বক্তব্য এবং প্লেস অফ অকারেন্স এই দুটোতে মিল খুঁজে পাচ্ছিলো না পুলিশ । এক সময় জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে বুলটি দেব এবং তার স্বামী বিষ্ণু দেব ।তারা স্বীকার করে এই ঘটনা তারাই ঘটিয়েছে। মহিলার গলার স্বর্ণালংকারটি তাদেরই এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়েছিল। পুলিশ সেটি উদ্ধার করে। মঙ্গলবার ধৃত অভিযুক্তদের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয় ।এই ঘটনা প্রসঙ্গে সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ডিপি রায় জানান , খুন হওয়া মহিলা সুলেখা দের বাড়িতেই থাকতেন তার মেয়ে বুলটি দেব এবং মেয়ের জামাই বিষ্ণু দেব ।পরিবারটিতে অশান্তি লেগেছিল ।অভাব অনটনকে কেন্দ্র করেই এই অশান্তি ।এর উপর মৃত সুলেখা দের একটি ফিক্সড ডিপোজিট আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ম্যাচিউড হওয়ার কথা ছিল। এই ফিক্সড ডিপোজিটে অন্য একজনকে নমিনি রাখা হয়েছিল ।ফিক্সড ডিপোজিট এর টাকা কেন তারা পাবে না এই নিয়ে অশান্তি চলছিল। এর উপর মেয়ের জামাই বিষ্ণু দেব একটি স্কুটি দাবি করে আসছিল।ফিক্সড ডিপোজিট এবং স্কুটির পরিপ্রেক্ষিতেই এই হত্যাকান্ড সংঘটিত করা হয় বলে জানান এসডিপিও ডিপি রায়।
নিজ বাড়িতেই বৃদ্ধার হত্যাকান্ড এবং স্বর্ণালংকার ছিনতাই এর ঘটনায় ভুবন বন এলাকায় জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় । কিন্তু মূল ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন এলাকাবাসী । এলাকাবাসী অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।