ভারত সরকার ঘোষিত “চাইল্ড ম্যারেজ ফ্রি ক্যাম্পেইন”–এর নির্দেশ অনুসরণ করে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও শিক্ষা দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যজুড়ে বাল্যবিবাহ রোধে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেই জাতীয় কর্মসূচিকে সফল করে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছে ত্রিপুরার উত্তর জেলার ভারত–বাংলা সীমান্তবর্তী কদমতলা বিধানসভার অন্তর্গত সাতসঙ্গম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
এই ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো সমাজ থেকে বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা এবং “বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও” কর্মসূচির মাধ্যমে কন্যাশিশুদের সুরক্ষা ও শিক্ষার প্রসার ঘটানো। বিশেষত সাতসঙ্গম চা বাগান এলাকায় যাতে কোনো অবস্থাতেই বাল্যবিবাহ সংঘটিত না হয়, সে লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা একযোগে সচেতনতামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ সাতসঙ্গম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এক সুসজ্জিত বাল্যবিবাহ বিরোধী র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালিতে বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা অংশগ্রহণ করেন। প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও সচেতনতামূলক স্লোগানের মাধ্যমে বাল্যবিবাহের কুফল ও কন্যাশিশুর শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
র্যালিটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে গোটা বাজার ও চা বাগান এলাকা পরিদর্শন করে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেয়। দীর্ঘ পথ পরিক্রমা শেষে দুপুর প্রায় ১টা নাগাদ র্যালিটি পুনরায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে সমাপ্ত হয়।
এই কর্মসূচি সম্পর্কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদ্যুৎ দাস জানান, “বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। সমাজ থেকে এই কুপ্রথা নির্মূল করতে হলে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের এই ১০০ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা চাই, সাতসঙ্গম চা বাগান এলাকায় কোনো শিশুর ভবিষ্যৎ যেন বাল্যবিবাহের কারণে নষ্ট না হয়।”
এই উদ্যোগে স্থানীয় অভিভাবক ও সাধারণ মানুষও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, এ ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।